Author: Pratham Bangla Foundation

  • বাঁধা দিবে না কেউ

    বাঁধা দিবে না কেউ

    খাবার নিয়ে এখানে চিন্তা করতে হয় না। যার ইচ্ছে খাবার নিয়ে নেন নিজ হাতে। বাঁধা দেওয়ার বা বাড়ন করার কেই নেই। সুবিধা বঞ্চিত মানুষ থেকে শুরু করে পথচারী সহ সবার জন্য উন্মুক্ত এই খাবারের টেবিল। যার রিজিকে আছে সেই খাবার সংগ্রহ করে আহার করে নিচ্ছেন। মহান আল্লাহতা’আলা সকলেরই রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন। আপনাদের সহযোগিতায় সেই উছিলা হতে চেয়েছি মাত্র। তাই এই আয়োজন। এই খাবারের টেবিল সকল সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য উন্মুক্ত।

    বুক ভড়া আক্ষেপ

    ছোট মেয়েটি আমাদের খাবারের টেবিল এর সামনে এসে বলতে লাগলো, আপা এই খাওন কি আমাগো লাইগা? আমরা নিলে আবার মারবেন না তো? সবাই দাবরানী দেয় আর কয় কাজ করতে পারোস না? আগে এক বাসায় কাজ করতাম, শুধু শুধু মারতো, কোন কারন ছাড়াই। মনে হয় শরীরটা হেরা কিন্না লইছে। তাই কাজ বাদ দিয়া দিছি। এখন রাস্তায় কাগজ টোকাই। যা কামাই তা দিয়াই খাই। কারও মাইর খাওন লাগে না। না কামাইলে না খাইয়াই থাকি তাতেও কষ্ট নাই। মানুষ টোকাই কয়, গালি দেয় দেগগা। কিন্তু কেউ খাওন দেয় না। আদর কইরা পাশে বসায় না। মানুষ এমনি আপু।

    আমাদের উত্তর

    ঠিক এ ভাবেই কথা গুলো বলছিলো রাস্তার এই শিশু-কিশোর গুলো। শুনে আমরাও বললাম, হ্যাঁ কিন্তু সবাই তো আর এক হয় না। খারাপ না থাকলে আমরা ভালোর মর্ম বুঝতাম না। যারা ভালো তাড়া সব সময় ভালবাসা বিলিয়ে বেড়ায়। এই যে দেখো তাড়া তোমাদের মত সকলের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন আর এই গুলো তোমাদের জন্যই। কেউ বাধা দিবে না, আর শরীরে হাত তোলা তো দূরের কথা। এই খাবার তোমাদের আপনজনরেই পাঠিয়েছেন তোমাদের জন্য।

    আপনারা আছেন বলেই

    কৃতজ্ঞতা রইলো আপনাদের প্রতি, ভালোবাসা দিয়ে এমন শিশু-কিশোরদের পাশে থাকার জন্য। আপনাদের আয়ের অংশ ভাগ করছেন সুবিধা বঞ্চিত মানুষ গুলোর জন্য আর আমরা তা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করে পৌঁঁছে দিচ্ছি তাদের কাছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আমাদের চেষ্টা মিলে একটু হলেও হাসি ফুটাতে পারবো বঞ্চিত মানুষ ও শিশু-কিশোরদের মুখে। আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা আমরা চেষ্টা করছি ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে খাবারের টেবিল স্থাপন করার। আশা করি আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা আমাদের পাশে সব সময়ই থাকবে।

  • শিশু-কিশোরদের নিয়ে আয়োজন

    শিশু-কিশোরদের নিয়ে আয়োজন

    খাচ্ছে শিশু-কিশোর, হাসছি মোরা। মানব সেবাই সর্বসেরা।
    এমন শিশু-কিশোরদের নিয়ে আয়োজন গুলো আমাদের একটু বেশি ভালো লাগে। তাদের মুখে খাবার তুলে দিতে পেরে যেমন আমাদের মনে আসে তৃপ্তি ঠিক অন্য দিকে আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি রইলো কৃতজ্ঞতা। খাবার পেয়ে মনের আনন্দে আহার করছে এই শিশু-কিশোররা। সচারাচর ভালো খাবার জুটে না তাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায়। তাই তো একটু চেষ্টা করি তাদের সামনে ভালো খাবার পরিবেশন করার।

    রিকশা চালক বাবার আকুতি

    অন্য দিকে রিকশা চালক বাবা আমাদের কে দেখে বলছিলেন তার মনে কষ্ট গুলো। বলছিলেন, বাবারে রিকশা টা নিয়া বইসা রইছি, কিন্তু লোক জন তো নাই। দিন রাইত রিকশা চালাই পরিবার থাকে গ্রামে। ২টা মাইয়া রে পড়াই। সংসারে অনেক খরচ, যা আমার একার আয়ে আর পারি না। তাই কোনো রাইতে খাই আবার কোনো রাইতে রুটি কলা দিয়া কাজ চালাই। পেট তো আর বুঝে না অভাব। আর বয়সও হইছে রে বাবা শরীরে আর কুলায় না। ক্ষিধা লাগলে মাথা টা ঘুরাই। কিন্তু বাবা রে আল্লাহর এক দুনিয়াতে আল্লাহ নিরাশ করেন নাই, মাঝে মধ্যেই তোমাগো মত সন্তানেরা আইসা খাওন দেয়। সেই খাওন খাইয়া আবার কাজ শুরু করি।

    আপনাদের অনুদান

    হ্যাঁ। এমন সুবিধা বঞ্চিত, মেহনতী ও রাস্তার পাশে থাকা মানুষ গুলোর জন্যই আমাদের রাতের এমন আয়োজন থাকে প্রতিদিনই। তাদের জন্যই আয়োজন হয় এমন নানা সেবা গুলো। তাদের হাতে তুলে দেই আপনাদের অনুদানে গড়া খাবারের বক্স। যা খেয়ে ক্ষুধার জ্বালা মিটান এমন মানুষ গুলো। শুকরিয়া আদায় করেন মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে। আর সদকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল যুক্ত হয় আমাদের দাতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের আমলনামায়। দু’আ করবেন সবাই।

    আমাদের প্রচেষ্টা

    আপনাদের কষ্টের আয়ের অংশ দিয়েই তো প্রতি দিন খাবার সেবা, বাজার, ক্রয়কৃত দুধ, চিকিৎসা সেবা, বস্ত্র, শিক্ষা, ক্ষুদ্র ব্যবসা সহ নানা সেবা গুলো দিতে পারছি সুবিধা বঞ্চিত মানুষ ও শিশু-কিশোরদের মাঝে। এমন কার্যক্রম গুলো নিরলস ভাবে চলমান থাকে পুরো বছর জুড়ে। নেই কোন ছুটি, নেই কোন বিশ্রাম নেওয়ার সময়। তাদের মাঝে সেবা প্রদান করেই মিলে আমাদের সাফল্য আর এই সকল সাফল্য তো আপনাদেরই। আমরা তো শুধু মাত্র কার্যক্রম গুলো সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনা করে যাচ্ছি।